Ad Code

Policy on Emergency Action Plan - জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা

জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা (আরএমজি)
জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় নীতিমালা
Policy on Emergency Action Plan



ভূমিকাঃ গার্মেন্টস শিল্প ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য রপ্তানী শিল্প হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার খুবই ব্যাপক ও আশাব্যঞ্জক যা প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। অগ্রণী এই গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন ধরনের জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার নিমিত্তে সুষ্ঠু নীতিমালা থাকা একান্ত বাঞ্ছনীয়।

উদ্দেশ্যঃ গার্মেন্টস শিল্পে যে কোন জরুরী অবস্থায় (অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা) করণীয়, প্রতিরোধ এবং প্রতিকার প্রসঙ্গে কি কি করতে হবে সেই সম্বন্ধে যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে আলোকপাত করা।

জরুরী অবস্থার প্রকারঃ  জরুরী অবস্থা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
১। অগ্নিকান্ড।
২। ভূমিকম্প।

৩। বন্যা।
৪। রাত্রীকালীন (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায়) জরুরী অবস্থা (স্যাবোটাজ বা ডাকাতি বা রাহাজানি)।
৫। উত্তেজিত শ্রমিকদের ব্যাপারে করণীয়।

অগ্নিকান্ডঃ অগ্নিকান্ড বা দূর্ঘটনা প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাসমূহঃ
ক) অগ্নিকান্ডের ঘটার সুযোগ না দেয়াই এর প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
খ) পর্যাপ্ত পরিমান সচল অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র বিভিন্ন সুবিধাজনক পয়েন্টে মজুদ রাখা।
গ) অগ্নিকান্ডের সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার করা।
ঘ) বিড়ি, সিগারেট তথা ধুমপান সম্পুর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা।
ঙ) দিয়াশলাই বা সিগারেটের লাইটার সমেত ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।
চ) গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন তথা বিভিন্ন ফিকচার ফিটিংস নিয়মিত পরিদর্শন করা এবং পরিদর্শন বইতে তা  লিপিবদ্ধ করা।
ছ) ফ্যাক্টরীতে কোমিক্যালস ব্যবহারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।
জ) অগ্নিনির্বাপনের উপর নিয়মিত অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে সচেতন করা।
ঝ) প্রত্যেক ফ্লোর/সেকশনে পূর্বাহ্নে অগ্নি নির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দল গঠন করা।
ঞ) ফ্যাক্টরী চলাকালীন প্রত্যেক গেটের/দরজার তালা খোলা রাখা এবং তালাচাবি প্রশাসনিক কর্মকর্তার নিকট জমা রাখা। প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্যই তা নিশ্চিত করবেন।
ট) ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে যাবার পর রুটিন মাফিক নিয়মিত চেক করা। উক্ত চেকের সময় এডমিন, সিকিউরিটি, ইলেকট্রিক এবং ষ্টোরের প্রতিনিধি থাকবে।
ঠ) প্রত্যেক সিঁড়িতে এবং প্রত্যেক ফ্লোরের উভয় প্রান্তে জরুরীবাতি/চার্জার লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ড) ফ্যাক্টরীতে অবস্থানরত গাড়ীগুলো সবসময় বহির্মূখী করে পার্ক করতে হবে। যাতে সল্প সময়ে নিরাপদ অবস্থান  গ্রহণসহ গাড়ী কর্তৃক কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি না হয়।
ঢ) প্রত্যেক ফ্লোরে নিয়ন্ত্রনের সুবিধার্থে পিএ ইকুইপমেন্ট/হ্যান্ড মাইকের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ভূমিকম্পের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা সমূহঃ
ক) ভূমিকম্পের আগাম খবর নেয়ার ব্যবস্থা।
খ) ভূমিকম্পের সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা ।
গ) সময়মত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থ্ াকরা ।
ঘ) দাহ্য পদার্থ সাবধানে সংরক্ষন করা যেন ভূমিকম্পের সময় পড়ে গিয়ে কোন ধরনের দূর্ঘটনা না ঘটাতে পারে।
ঙ) একের অধিক দাহ্য পদার্থ একই সঙ্গে না রাখা।
চ) ভূমিকম্পের উপর অনুশীলন/মহড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতঃ সকলকে সচেতন করা ।
ছ) প্রত্যেক ফ্লোরে ইউনিটে পূর্বাহ্নেই উদ্ধারকারী দল চিহ্নিত করা।
জ) ফ্যাক্টরীর প্রত্যেক গেট ভিতর হইতে তালা খোলা থাকবে।
ঝ) ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।
 
বন্যার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সমূহঃ
১। বন্যার আগাম খবর এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার ব্যবস্থা করা ।
২। সময়মত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা ।
৩। যাবতীয় জিনিসপত্র, যন্ত্রপাতি বন্যার পানির বিপদ সীমার উপরের উচ্চতায় কোন স্থানে ষ্টোর করা।
৪। বন্যার সময় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা।
৫। প্রত্যেক ফ্লোরে ইউনিটে পূর্বাহ্নেই উদ্ধাকারী দল চিহ্নিত করা।
৬। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।

রাত্রিকালীন জরুরীঅবস্থার (ফ্যাক্টরী বন্ধ অবস্থায় স্যাবোটাজ/ডাকাতি ইত্যাদি) জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সমূহঃ
১। রাত্রিকালীন জরুরীঅবস্থায় যোগাযোগ করার জন্য দায়িত্ববান কাউকে নিবেদিত করা।
২। পর্যাপ্ত পরিমান সতর্কীকরন যন্ত্র (সাইরেন/কলিংবেল) সুবিধাজনক স্থানে মজুদ রাখা।
৩। জরুরীঅবস্থায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করা।
৪। জরুরীটেলিফোন নম্বর সমূহ (থানা পুলিশ, ফায়ার বিগ্রেড, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী) বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে  লাগিয়ে রাখা।

উত্তেজিত শ্রমিকদের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা সমূহঃ
১।  শ্রমিকদের উত্তেজিত হওয়ার সুযোগ না দেওয়াই ভাল।
২।  উত্তেজিত শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত দাবী দাওয়া বা অভিযোগের নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা।
৩।  শ্রমিকদের মোটিভেশনের ব্যবস্থা করা।
৪।  সতর্কমূলক ব্যবস্থা হিসাবে আগে থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা ও প্রয়োজনীয় স্থানে (স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ থানা) জানিয়ে রাখা।
৫।  জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ।
৬।  সম্ভাব্য অগ্নিকান্ডের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।

জরুরী অবস্থার প্রতিকার সমূহঃ
ক) যদি কোন ফ্লোরে আগুন লাগে তাহলে আগুন লাগার সাথে সাথে সকলকে সতর্কীকরনের নিমিত্তে হুটার/সাইরেন/কলিং বেল বাজিয়ে সতর্ক করতে হবে।
খ) যে ফ্লোরে আগুন লেগেছে সে ফ্লোরের বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ অফ করে দিতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব  ফ্যাক্টরীর প্রধান সুইচসহ অফ করে দিতে হবে।
গ) অগ্নিনির্বাপক দল ও উদ্ধারকারী দল ব্যতীত মহিলা ও পুরুষগণ ১/২ মিনিটে দ্রুততায় সিঁড়ি দিয়ে অনুযায়ী বের হয়ে যাবে।
ঘ) নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিগন তৎক্ষনাৎ ফ্যাক্টরীর গেটের ভিতর এবং বাহিরে অবস্থান নিবে। বাহির থেকে কেহ যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে তার ব্যবস্থা নিবে অর্থাৎ কর্ডন দলের কাজ করবে। তাছাড়া মানুষ ও গাড়ী চলাচলের জন্য সম্মুখের রাস্তা উন্মুক্ত রাখবে।
ঙ) অগ্নিনির্বাপক দল কর্তৃক ফ্লোর/সেকশনে রক্ষিত অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
চ) অগ্নিনির্বাপক দল এবং উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
ছ) ফ্লোর বা সেকশন থেকে লোকজন নেমে যাওয়ার পর উদ্ধারকারী দল দ্রুত দূর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসক দলের কাছে নিয়ে যাবে এবং প্রয়োজনে ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দিবে।
জ) কারো গায়ের কাপড়ে আগুন লেগে গেলে তৎক্ষনাৎ ফ্লোরে গড়াগড়ি দিতে হবে। কোন ক্রমেই দৌড়ানো যাবে  না ।
ঝ) বাথরুম/টয়লেট ও বিল্ডিং এর ছাদ চেক করতে হবে যাতে কোন লোক আটকা পড়ে না থাকে।
ঞ) কোন ভাবেই সিঁড়ি ব্যতীত অন্য কোন অবস্থায় নামবার চেষ্টা করবে না।
ট) অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত মালামাল উদ্ধার করবে।
ঠ) বন্যার সময় পানি ঢুকার পূর্বেই সমস্ত যন্ত্রপাতি, জিনিসপত্র, জরুরীকাগজপত্র নিরাপদ উচ্চতায়, নিরাপদ স্থানে  সরিয়ে নিতে হবে।
ড) পানিপূর্ণ বা পানির কাছাকাছি স্থানে বৈদ্যূতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
ঢ) বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা ।
ণ) বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা ।
ত) ভূমিকম্পের সময় মহিলা এবং পুরুষগণ নির্ধারিত সিঁড়ি দিয়ে বের হয়ে যাবে।
থ) ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকারী দল দূর্ঘটনায় কবলিত লোকজন এবং জিনিসপত্র উদ্ধার করবে।
দ) উদ্ধারকারী দলকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করতে হবে।
ধ) ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
ন) ফ্যাক্টরী বন্ধ থাকা অবস্থায় রাত্রিকালীন যে কোন জরুরী অবস্থায় কর্তব্যরত ব্যক্তি অতি সত্তর নিবেদিত  দায়িত্ববান ব্যক্তিকে এবং প্রয়োজনীয় সকল জায়গায় অবহিত করবেন।
প) যে কোন জরুরী অবস্থা মুখোমুখী হওয়ার সাথে সাথে সতর্কীকরনের নিমিত্তে সাইরেন কলিংবেল বাজিয়ে সকলকে সতর্ক করতে হবে।

প্রশাসনিক শাখা কর্তৃক গ্রহনীয় বিবিধ ব্যবস্থাঃ
ক) আহত লোকজনকে প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্যাক্টরীর চিকিৎসা কেন্দ্রে বা নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
খ) অনতিবিলম্বে ফায়ার বিগ্রেডকে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য টেলিফোন করতে হবে।

অগ্নি নির্বাপন/জরুরীঅবস্থার জন্য দল সমূহের সংগঠন
ক)  কর্ডন পার্টি :--
১। নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ:-
২। অবস্থানঃ গেটের বাহিরে এবং ভিতরে।
৩। কাজঃ অনুপ্রবেশকারীকে প্রতিহত করা এবং সামনের রাস্তাটি গাড়ীচলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা যাতে ফ্যাক্টরীর লোকজন নির্বিঘে বাসায় গমন করতে পারে এবং ফায়ার বিগ্রেড, পুলিশের গাড়ী চলাচল করতে পারে।
খ) অগ্নি নির্বাপণকারী দলঃ প্রত্যেক ইউনিট/শাখা/সেকশনের প্রধানগন অগ্নি নির্বাপনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। তাদের তত্বাবধানে অগ্নি নির্বাপনকারী দল এবং উদ্ধারকারী দল কাজ করবে। তারা পরিচালক অথবা প্রশাসনিক প্রধানের সাথে আলোচনা পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
গ) উদ্ধারকারী দলঃ প্রথমে মানুষ এবং পরে মালামাল উদ্ধার করবে।
ঘ) প্রাথমিক চিকিৎসা দলঃ দূর্ঘটনা কবলিতদের দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করিবে।
ঙ) অগ্নি নির্বাপক, উদ্ধারকারী এবং প্রাথমিক চিকিৎসকদের দল সংগঠন এবং যাবতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য । 

জরুরী মহূর্তে যোগাযোগের ঠিকানাঃ
যে কোন ধরনের জরুরীমহূর্তে নিন্মক্তো ঠিকানায় যোগাযোগ করুন;
১।মহাব্যবস্থাপক -  দেবনাথ চেীধুরী - ০০০০০০০৮৪৩৪
২।কারখানা ব্যবস্থাপক-শিহাব হাসান - ০০০০০০০৮৪১৮
৩।কমপ্লাইন্স প্রধান - মো. হানিফ  উদ্দিন - ০০০০২৩৮১৩৩৮
৪।এইচ.আর.কর্মকর্তা - হাসান আহমেদ - ০০০০৯৩৩০০৪৬
৫। এইচ.আর.কর্মকর্তা - হোসেন আহমেদ- ০০০০২৩৭৮২৩৫

উপসংহারঃ
যে কোন জরুরী অবস্থায় আমাদের সকলকে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারনত ক্ষতি হবে ভয়াবহ ও অপূরণীয়। তাই সম্মিলিত ভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। জান ও মালের হেফাজত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।




কর্তৃপক্ষ
...............লিঃ




প্রিয় পাঠক নিচের লিংকটি ক্লিক করুন।
HR and Compliance Guide এর Facebook Page লাইক দিয়ে নতুন পোষ্টগুলো সম্পর্কে জানুন্।

Post a Comment

2 Comments

Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)